সুরা আর রহমানের ফজিলত | Importance of Sura Ar-Rahman.
হাদীস শরিফে নবী করীম (সঃ) এরশাদ করেন, প্রত্যেক জিনিসেরই একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। সূরা আর-রহমান কোরআন শরীফের সৌন্দর্য। ফযীলতের দিক দিয়ে এটি অর্ধেক কোরআনের সমান।
কোনো কোনো বুযর্গ এ সূরাটিকে কোরআনের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন।
কোন সূরার আমল করলে চেহারা সুন্দর হয় সন্তান বাবা মায়ের কথা শুনে?
নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন , যারা শুধু আল্লাহকে খুশী করার জন্য এ সূরাটি প্রত্যহ আছরের
নামায বাদ পাঠ করবে , তাদের চেহারা নূরানী হবে, স্ত্রী পুত্র তার তাবেদার হবে, তার
রিজিক বৃদ্ধি পাবে এবং সে ব্যক্তি বেহেশতের হকদার হয়ে যাবে।
সমগ্র কোরআনের মধ্যে এ সূরাটি অদ্বিতীয়। এর রচনা শৈলী ও বাক্য বিন্যাস প্রণালী এত
প্রাণস্পর্শী যে, আরবীয় কবিগণ সূরাটির ছন্দ মাধুর্য, ভাষার দ্যোতনা, ভাব ও বক্তব্যের
ব্যঞ্জনায় অভিভূত হয়ে এর ভূয়সী প্রশংসা করতেন ।
কবিগণের কোরাস ছন্দের ন্যায় এ সূরাটিতে "ফাবিআইয়্যি আ-লা-ই রাব্বিকুমা
তুকাযযিবান " বাক্যটি পুনঃ পুনঃ উল্লেখ থাকায় এটি অত্যন্ত সুন্দর ও শ্রুতিমধুর
হয়েছে। এই আয়াতে সুরা রহমানে ৩১ বার মহান আল্লাহ বলেছেন। এর সুমধুর শব্দ ও অমিয় বাক্যলহরীর
আবেগে কাফেররাও হতবাক হয়ে যেত!
একটি অজানা তথ্য জেনে নিন সূরা আর-রাহমান সম্পর্কে।
এক বর্ণনায় আছে (ইসলামের তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমান গনী জুন্নরাইন (রাঃ) এ সূরাটি পাঠ
করে বেহেশতবাসীকে মোহিত করবেন।
সূরা আররহমানের বেশির ভাগ বিষয়বস্তু মহান আল্লাহ তাআলার ইহলৌকিক ও পারলৌকিক অনুগ্রহসমূহের
বর্ণনা সম্পর্কিত। তাই যখন কোন আল্লাহর বিশেষ অবদান উল্লেখ করা হয়েছে তখনই মানুষকে
সতর্ক ও কৃতজ্ঞতা স্বীকারে উৎসাহিত করার জন্যে "ফাবি আইয়ি আলা ইরাব্বিকুমা তুকায্যিবান"
বাক্যটি বার বার উল্লেখ করা হয়েছে ।
সমগ্র সূরায় এ বাক্য একত্রিশ বার ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্যেক বার বাক্যটি নতুন নতুন
বিষয়বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে এটা অলংকারশাস্ত্রের পরিপন্থী নয়। আল্লামা
সুয়ূতী এ ধরনের পুনরুল্লেখের নাম রেখেছেন।
এটা বিশুদ্ধভাষী আরবদের গদ্য ও পদ্য রচনায় বহুল ব্যবহৃত এবং প্রশংসিত। শুধু আরবী ভাষাই
নয়, ফারসী, উর্দু, বাংলা প্রভৃতি ভাষায়ও সর্বজনস্বীকৃত কবিদের কাব্যে এর উদাহরণ পাওয়া
যায়।
এখানে দেখুন-
সূরা মূলকের গূরুত্বপূর্ণ ফজিলত।
তবে এসব উদাহরণ উদ্ধৃত করার স্থান এটা নয়। তারপরেও জানার জন্য বলা। তাফসীরে রূহুল
মা'আনীতে এস্থলে কয়েকটি উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
সূরা আররাহমান মক্কায় না মদীনায় অবতীর্ণ, এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে । কুরতুবী কতিপয়
হাদীসের ভিত্তিতে মক্কায় অবতীর্ণ হওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন ।
তিরমিযীতে হযরত জাবের (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুৱাহ (সাঃ) কয়েকজন লােকের সামনে সমগ্র
সূরা আররাহমান তেলাওয়াত করেন। তারা শুনে নিশ্চুপ থাকলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, আমি
‘লাইলাতুল জ্বিনে’ জ্বিন — রজনীতে – জ্বিনদের সামনে এ সূরা তেলাওয়াত করেছিলাম। প্রভাবান্বিত
হওয়ার দিক দিয়ে তারা তোমাদের চেয়ে উত্তম ছিল। কারণ , আমি যখনই "ফাবি আইয়ি আলা
ইরাব্বিকুমা তুকায্যিবান" আয়াতটি তেলাওয়াত করতাম, তখনই তারা সমস্বরে বলে উঠত:
ربّنَا لا نكْذِبُ بِشى من نعمَتك فَلك الحمد,
অর্থ, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আপনার কোনো অবদানই অস্বীকার করবনা। আপনার জন্যই
সমস্ত প্রশাংসা।
এ হাদীস থেকে জানা যায়, সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। কেননা, জ্বিন-রজনীর ঘটনা মক্কায়
সংঘটিত হয়েছিল। এ রজনীতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জ্বিনদের কাছে ইসলাম প্রচার করেছিলেন এবং
তাদেরকে ইসলামী শিক্ষা দান করেছিলেন।
সুরা আর রহমান:
আরও দেখুন নিচের ভিডিওতে-
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুরা আর রহমান আমল নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
সূত্র: kassbd.blogspot.com
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Countdown
কোন মন্তব্য নেই